সুবিধাসমূহ

বেশিরভাগ অনলাইন পরিষেবাগুলি যেগুলি সমাজকে 20 বছর আগে ইন্টারনেটের বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হওয়ার সময় থেকে রূপান্তরিত করে দিয়েছে, সেগুলি তাদের কাজ শুরু করার জন্য অর্থসংস্থান পেয়েছিল ভেঞ্চার ক্যাপিটালের মাধ্যমে। পণ্য পরিবহনের অ্যাপ থেকে শুরু করে ডেটিং করার অনলাইন মার্কেট ও খাবার সরবরাহ করার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম — এক সম্পূর্ণ কর্মক্ষেত্র উঠে এসেছে মূলত ব্যক্তিগত অর্থ সংস্থানের মাধ্যমে। এইসব প্ল্যাটফর্ম ও পরিষেবাগুলি আমাদের জীবনকে অনেক সুবিধাজনক করে দিয়েছে এবং ছোটখাটো স্বল্প মেয়াদি পরিষেবাগুলি পাওয়ার উপায় সহজতর করে দিয়েছে। অপর দিক থেকে, ভেঞ্চার ক্যাপিটালের অর্থ সংস্থানের ফলে শুরু করা উদ্যোগগুলির সুস্পষ্ট উদ্দেশ্য ছিল শেয়ারহোল্ডারদের জন্য স্বল্প মেয়াদের মধ্যে লাভ করতে পারা। প্রায়ই জনহিত করার দায়িত্ব আড়ালেই থেকে যায়। যেকোনো স্টার্টআপ (সূচনাকালীন) উদ্যোগী যিনি ভেঞ্চার ক্যাপিটাল নিয়ে কাজ করছেন তাকে এই ব্যবসায়িক মডেলের যুক্তি মেনে চলতে হবে আর ধীরে ধীরে পরিষেবাটি গ্রহণকারীদের থেকে সেই মূল্যটা টেনে নেবেন। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল থেকে টাকা নিলে, স্টার্টআপগুলিকে অবশ্যই লাভ সর্বাধিককরণ করতে হবে এবং তাদের নিজেদের পছন্দের কর্মক্ষেত্র থেকে প্রতিযোগীদেরকে সরিয়ে ফেলতে হবে। যদি তারা কিছু মাসের পর সেই কাজটা করতে ব্যর্থ হন, তা হল বিনিয়োগকারীরা সেই স্টার্টআপের উপরে নিয়ন্ত্রণ হাসিল করেন।

প্ল্যাটফর্ম সমবায় (কো-অপারেটিভ) প্রত্যেক স্টার্টআপ স্থাপনকারীকে এক আলাদা ধরনের রাস্তায় চলার প্রস্তাবনা দেয়। সমস্ত প্রযুক্তি সৃজনকারী অথবা প্রযুক্তি দ্রুতায়নকারীদের অংশগ্রহণকারীদের জন্য এই মডেলটা একটা বিকল্প হতে পারে।

একটা প্ল্যাটফর্ম সমবায় (কো-অপারেটিভ) উদ্বোধন করে, আপনি সদস্যদের প্রাপ্য পুঁজি ব্যবহার করতে পারবেন আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল, এতে ব্যবসার উপরে আপনার নিয়ন্ত্রণ চলে যায় না এমনকি যখন আপনি তৎক্ষণাৎ কোনো লাভ করতে পারছেন না তখনও। অন্য ভাষায় বললে, প্ল্যাটফর্ম সমবায় (কো-অপারেটিভ)-এর মডেল প্রযুক্তিগত উদ্যোগীদেরকে সুস্থায়ী ব্যবসা গড়ে তুলতে দেয় যারা দীর্ঘমেয়াদি ধরনের মূল্য গড়ে তোলে। উদ্যোগ স্থাপনকারীরা সামাজিক ভাবে মঙ্গলজনক কিছু আত্তীকরণ করা বা অন্যান্য সাংস্কৃতিক ও সামাজিক উদ্দেশ্যকে সরাসরি তাদের ব্যবসায়িক মডেলের মধ্যে আত্তীকরণ করার ব্যাপারে স্বাধীন থাকেন।

এক প্ল্যাটফর্ম সমবায় (কো-অপারেটিভ) চালানোর অর্থ হল, সমবায় (কো-অপারেটিভ)-এর সদস্যরা প্ল্যাটফর্মটির মালিক, যা তাদেরকে কোডের উপরে সার্বভৌমত্ব প্রদান করে। সদস্যদের তাই ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তার উপরে অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণ এবং প্ল্যাটফর্মটিতে থাকা তথ্য নিয়ে কী কী করা হয় সেই নিয়ে স্বচ্ছতা থাকে।

কর্মীদের সমবায়, হিসাবে সংগঠিত হয়ে, প্রযুক্তি কর্মীরা গণতান্ত্রিক ব্যবসা গড়ে তুলতে পারে তারা নিজেরাই যেটার মালিক আর যাকে তারা নিজেরাই পরিচালনা করেন। সমবায় (কো-অপারেটিভ)গুলি স্বাধীন ভাবে এটা ঠিক করে যে তারা তাদের সদস্য বলতে ঠিক কী বোঝায়: এটা কেবলমাত্র কর্মীদের নিয়ে গঠিত হতে পারে, অথবা কিছু কিছু গ্রাহকদের বা উৎপাদকদের, এবং এমনকি কমিউনিটির সদস্যদের বা অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হতে পারে। প্রত্যেক মালিকের একটা শেয়ার আর সমবায়ের জন্য একটা ভোট থাকে — যার মানে হল তারা কোন প্রজেক্টগুলো গ্রহণ করবেন সেই নিয়ে তারা যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।

ডিজিটাল ব্যবসা ও প্রজেক্টগুলোর জন্য সমবায়মূলক মডেলের দিকে ঝুঁকলে, আমরা ব্যবহারকারী, কর্মী, আর মালিকদেরকে তাদের ডিজিটাল সম্পদগুলির উপরে সার্বভৌমত্ব দিতে পারি।

Who Else Benefits from Platform Co-ops