আয়ের বৈষম্য

আয়ের বৈষম্য এক বিশ্বব্যাপী সংকট। Oxfam বলছে যে এখন কেবল 26 জন ব্যক্তির কাছে বিশ্বের তলানিতে থাকা 3.8 বিলিয়ন সংখ্যক মানুষের সমান সম্পদ আছে। অ-লাভজনক অভিবক্তাদের সংগঠনগুলির মিলিত উদ্যোগ, অনুদান দেওয়ার প্রতিষ্ঠানগুলি আর সেই সব কমিউনিটি সংগঠকরা যারা এক ব্যাপক ধরনের সামাজিক সমস্যাগুলি নিয়ে কাজ করছেন তাদের অবশ্যই একত্র হয়ে এই বিষয়টা নিয়ে ভাবতে হবে। আয়েরবৈষম্য, এবং অবদমিত মজুরি ও তার সাথে যেসব প্রাপ্য সুবিধাগুলি ক্রমাগত কমে যাচ্ছে, তার তলায় চাপা পড়ে থাকছে কর্মীদের কথার শুনানি না হওয়া আর সমস্যার উপরে তাদের নিয়ন্ত্রণের অভাব থাকার মতো এক গুরুতর সমস্যা। যেসব কোম্পানিগুলি তাদের কর্মীদেরকে সম্মান করে, তারা তাদেরকে ন্যায্য মজুরি দেয় আর তাদের সাথে মর্যাদাসূচক ভাবে আচরণ করে। পুঁজিবাদের এই বর্তমান রূপটা বেশির ভাগ মানুষের উপকারে লাগছে না।

গিগ (gig) বা ছোটখাটো স্বল্প মেয়াদি কাজ করার অর্থনীতির ক্ষেত্রে এটা যতটা সত্যি সেটা হয়তো আর কোনো ক্ষেত্রে ততটা হবে না। এর এত দ্রুত সম্প্রসারিত হওয়া, ধ্বংসাত্মক প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনগুলি, আর বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ভেঞ্চার ক্যাপিটালের বিনিয়োগ হওয়ার কারণে, “ভাগাভাগি করে নেওয়ার অর্থনীতি” চাকরির বাজারকে নাটকীয় ভাবে পরিবর্তন করে দিয়েছে। সুস্থায়ী, 9টা থেকে 5টা পর্যন্ত চাকরি করার সুযোগগুলি অনেক কম আর সেগুলি তেমন হাতের নাগালের মধ্যে নেই। গিগ (gig) বা ছোটখাটো স্বল্প মেয়াদি কাজগুলি তাদের জায়গা দখল করে নিচ্ছে। তবু, কর্মস্থল সংগঠকরা আর যারা কর্মীদের অধিকারের দাবীগুলি করে থাকেন তারা এখনো গিগ (gig) বা ছোটখাটো স্বল্প মেয়াদি কাজ করার অর্থনীতির উত্থানের পরিস্থিতির সাথে তাল মিলিয়ে এগোতে পারেননি।

কর্মীদের ক্ষমতাহীন হয়ে পড়া প্রতিরোধ করার ব্যাপারে অনুদানকারী ফাউন্ডেশনগুলিকে এক প্রয়োজনীয় ভূমিকা নিতে হবে। সমন্বয়সাধনকারী সংস্থাগুলিতে বিনিয়োগ করে এবং সরাসরি প্ল্যাটফর্ম সমবায় (কো-অপারেটিভ)গুলিতে এবং সংশ্লিষ্ট গবেষণায় অর্থ সংস্থান করে, ফাউন্ডেশনগুলি বহু ধরনের লক্ষ্য পূরণ করতে পারবে। প্ল্যাটফর্ম সমবায় (কো-অপারেটিভ)গুলি মজুরি বাড়ায়, কর্মীদের বক্তব্যকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরে, ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তগুলির গণতন্ত্রায়ন ঘটায়, কর্মস্থলের বৈচিত্র্য উৎসাহিত করে, আর কমিউনিটির প্রয়োজনীয়তাগুলিকে তাদের ব্যবসায়িক পরিকল্পনার মধ্যে সামিল করে নেয়। প্ল্যাটফর্ম সমবায় (কো-অপারেটিভ)গুলি প্রায়ই অপরিচিত বিষয় নিয়েও ব্যবসা সংগঠিত করে তোলে। কেবল একবার Savvy.coop সম্পর্কে জানুন। এই এন্টারপ্রাইজটি এমন সব রোগীদেরকে একত্র করে যাদের দীর্ঘস্থায়ী ও বিরল ধরনের রোগ আছে আর তাদেরকে ব্যবহারকারীদের মালিকানা আছে এমন প্ল্যাটফর্ম-এ রেখে প্ল্যাটফর্ম সমবায় (কো-অপারেটিভ) মডেলের মাধ্যমে এমন সব কোম্পানী ও গবেষকদের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেয় যারা তথ্য সংগ্রহ করতে চাইছে।

বিভিন্ন ফাউন্ডেশনগুলি ইতিমধ্যেই সমবায়িক ডিজিটাল অর্থনীতিকে সহযোগ দিয়ে আমাদের পথ দেখাচ্ছে। কো-অপারেটিভস ইউকে আর নেসলা ফাউন্ডেশন ঘোষণা করেছে যে তারা ইউকের প্ল্যাটফর্ম সমবায় (কো-অপারেটিভ)গুলিতে বিনিয়োগ করার জন্য একটা ফান্ড গড়ে তুলবে আর 2018 সালে Google.org প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে তারা $1 মিলিয়ন প্ল্যাটফর্ম কো-অপারেটিভ ডেভলপমেন্ট কিট-এর জন্য বিনিয়োগ করবে। ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যে তারা প্ল্যাটফর্ম সমবায় (কো-অপারেটিভ)গুলি কীভাবে দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় ছেয়ে যেতে পারবে সেই নিয়ে আরও গবেষণায় সহযোগিতা করবে। কিন্তু আরও অনেক প্ল্যাটফর্ম সমবায় (কো-অপারেটিভ)কে সহযোগিতা করা প্রয়োজন! প্ল্যাটফর্ম সমবায় (কো-অপারেটিভ)গুলি পুঁজির অভাবে ভুগছে অথচ এখানে বিনিয়োগ করার বিভিন্ন সুযোগ হাজির হয়েছে। ফাউন্ডেশনগুলিকে এই অভাব মেটানোর জন্য এগিয়ে আসতে হবে।

যদিও কেবলমাত্র অর্থসংস্থানগত সহযোগিতা ছাড়াও, এই আন্দোলনে অ-লাভজনক সংস্থাগুলি ও সক্রিয়কর্মীদের সমর্থন দরকার যারা বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক বিষয়গুলি নিয়ে কাজ করছে। প্ল্যাটফর্ম সমবায় (কো-অপারেটিভ)গুলি যেহেতু বহু বিচিত্র ধরনের সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যাগুলি নিয়ে কাজ করে — যেমন গোপনীয়তার অধিকারের অভাব, জাতি ও লিঙ্গগত পক্ষপাত দুষ্টতা, প্রান্তিক জনগণের প্রতিনিধিত্ব কম থাকা, এবং আরও অনেক রকমের সমস্যা — আমাদের বিভিন্ন ধরনের আন্দোলনগুলিকে সাথে নিয়ে নিজেদের মধ্যে বন্ধুত্বর সম্পর্ক গড়ে তোলা দরকার। এই বিকল্প অর্থনীতির মডেলের মাধ্যমে, আমাদের বহু ধরনের রাজনৈতিক আন্দোলন বরাবর সংহতি গড়ে তুলবার এক সুযোগ আছে। জনসেবামূলক সংগঠনগুলি আর প্রবক্তাদের, অবশ্যই কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ ও প্ল্যাটফর্ম সমবায় (কো-অপারেটিভ)গুলির সাথে একজোট ও শক্তিশালী হয়ে এটা সম্ভবপর করে তুলতে হবে!

Who Else Benefits from Platform Co-ops